নিউজ ফ্রন্টলাইনার ওয়েবডেস্ক,১২ই নভেম্বর,২০২১ঃ করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় তরঙ্গের অভিঘাতে রাজ্যের স্কুল কলেজগুলি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শেষমেষ আগামী ১৬ই নভেম্বর থেকে সেগুলি আংশিকভাবে খুলতে চলেছে।এর আগে ফেব্রুয়ারিতে যেমন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য দুমাসের জন্য স্কুল খুলে আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেইভাবেই এবারো খুলতে চলেছে সরকারি এবং সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলি।
কিন্তু স্কুল খুললেও সবছাত্রছাত্রীকে আবার বিদ্যালয়মুখী করা যাবে কিনা, সেই বিষয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। রাজ্য সরকারের নিজের হিসেবেই এক বড়ো অংশের ছাত্রছাত্রী স্কুলছুট হয়ে পড়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সাম্প্রতিক সময়ে একটি রিপোর্টের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছে বিশেষত দরিদ্র পরিবারের এক বড়োসংখ্যক ছাত্রছাত্রী ইতিমধ্যেই পড়া ছেড়ে দিয়েছে। লকডাউন এবং নানাবিধ বিধিনিষেধের প্রভাবে দিনমজুর পরিবারের ছেলেরা বাবাকাকাদের সঙ্গে ভিনরাজ্যে কাজের আশায় পাড়ি জমিয়েছে। অন্যদিকে নাবালিকা ছাত্রীদের অনেককেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে দারিদ্র্যের সাথে অসম লড়াইতে টিঁকে থাকতে না পেরে। এই খতিয়ান মূর্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকারের দেওয়া স্কুলপড়ুয়াদের পাঠ্যবই এবং পোষাকের বরাতে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষেও এই ক্ষেত্রগুলিতে যা বরাদ্দ ছিল, বর্তমানে সেটি প্রায় অর্ধেক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছাত্রীদের স্কুলছুটের হার অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প কন্যাশ্রীর সাফল্যের প্রচারে একটা বড়োসড়ো প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই এই কমতির হার উদ্বেগজনক।এই পরিস্থিতিতে বামদলগুলি প্রত্যেক স্কুলছুট পড়ুয়াকে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে যথোচিত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য প্রান্তিক ও খেটে খাওয়া পরিবারের শিশুদের শিক্ষার অধিকার সুনিশ্চিত করা কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারেরই দায়িত্ব, এবং সেই দায়িত্ব পালনে তাদের সদর্থক পদক্ষেপ নিতেই হবে। কাজের খোঁজে যাঁরা ভিনরাজ্যে যেতে বাধ্য হন, তাঁদের রাজ্যে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলছুট হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমবে বলে বামপন্থীদের ধারণা।